আরও দেখুন
আশাবাদী থাকা এবং আশা করা সহজ যে নীতিনির্ধারকগণ আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করবেন। কিন্তু কেন এই ভাবনা তৈরি হয়? এবং কেন এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ফাঁদে পরিণত হতে পারে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করল, তখন মার্কেটে যে অ্যাসেটের সেল-অফ বা বিক্রির প্রবণতা শুরু হয়েছিল তা সাময়িকভাবে থেমে গেছে। এর পেছনে কারণ হলো হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার একটি মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা, যা তিনি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে দিয়েছিলেন। ট্রাম্প কি ৯০ দিনের জন্য বাণিজ্যযুদ্ধ স্থগিত করতে পারেন—এই প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত একান্তই প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারভুক্ত।
এই বক্তব্যে মার্কেটের ট্রেডাররা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখায়, ফলে সব মার্কেটে বিপুলসংখ্যক শর্ট পজিশন ক্লোজ হয়ে যায় এবং স্টক সূচক, কমোডিটি অ্যাসেট এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্যের উল্লেখযোগ্য রিবাউন্ড দেখা দেয়। ফরেক্স মার্কেটে মার্কিন ডলার কিছুটা সমর্থন পায় এবং ICE ডলার সূচক 103.00 এর ওপর অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়।
তবে কেন এত সাধারণ একটি মন্তব্যে বিনিয়োগকারীরা এমনভাবে প্রতিক্রিয়া দেখালেন?
আমার মতে, এখানে দুটি মূল কারণ কাজ করেছে। প্রথমটি হলো যুক্তিসংগত আশাবাদ—বর্তমান প্রশাসন জাতীয় অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করবে। যদি যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়, তবে সেটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি চান যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে "জাতির মহান রক্ষাকারী" হিসেবে স্মরণীয় হতে।
দ্বিতীয় কারণ হলো বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে আলোচনার আগ্রহ এবং ট্রাম্পের কঠোর নীতিমালার প্রতি কিছুটা নমনীয়তা দেখানোর ইঙ্গিত। অনেক দেশই এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনায় বসতে আগ্রহী এবং ইতোমধ্যেই তারা ব্যাপক ছাড় দিতে প্রস্তুত বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
এই দুইটি প্রত্যাশাই সাম্প্রতিক সেল-অফ বা বিক্রির প্রবণতায় বিরতিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। মার্কেটের অনেক ট্রেডার মনে করছেন এটি ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেট—স্টক, ক্রিপ্টোকারেন্সি, কমোডিটি কন্ট্রাক্ট—কেনার জন্য উপযুক্ত সময়। ইতিহাস বলে, এই কৌশল বহু দশক ধরে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এবার কি তা কাজ করবে? এটাই মূল প্রশ্ন। আমরা কি হতাশাজনক পরিস্থিতির পর দ্বিতীয় দফায় অ্যাসেটের সেল-অফ বা বিক্রির প্রবণতা দেখতে পাবো?
হ্যাঁ, এই ঝুঁকির বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তার ঘন কুয়াশার মধ্য দিয়ে পথ চলেছে। সোমবার সাময়িকভাবে মার্কেটে ইতিবাচক পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল, কারণ গুঞ্জন ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়তো ৯০ দিনের জন্য নতুন শুল্ক স্থগিত করতে পারেন—কিন্তু হোয়াইট হাউস দ্রুত সেই খবর অস্বীকার করে। এরপর ট্রাম্প হুমকি দেন, চীন যদি তাদের পাল্টা পদক্ষেপ তুলে না নেয়, তাহলে বুধবার থেকে তিনি আমদানিকৃত চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত 50% শুল্ক আরোপ করবেন।
সোজা কথায়, এই রিবাউন্ড হতে পারে একটি "ডেড ক্যাট বাউন্স"—এরপর ফের মার্কেটে বিশৃঙ্খল দরপতনের ধারা ফিরে আসতে পারে। এবং এটি শুরু হতে পারে ট্রাম্পের চীনের ওপর নতুন শুল্ক ঘোষণার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে—যা তিনি বুধবারই নিতে পারেন। তিনি কি এটা করবেন? ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সবাই বুঝে গেছি, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট কখনো পিছু হটেন না। তিনি কৌশল পাল্টাতে পারেন, কিন্তু ছাড় দেন না।
মার্কেট থেকে আমরা কী আশা করতে পারি?
আমার বিশ্বাস, সামগ্রিক চিত্র এখনও নেতিবাচক। শুধু তখনই শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যেতে পারে, যদি ওয়াশিংটনের বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতি বাস্তবিকভাবে পরিবর্তিত হয়। স্টক মার্কেট ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্যভাবে দরপতনের শিকার হয়েছে এবং এখন তা বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আমি মনে করি, মধ্য ও দীর্ঘ-মেয়াদী বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যেই সুযোগ নিচ্ছেন। টোকেনের ক্ষেত্রে আগ্রহ তুলনামূলকভাবে দুর্বলই থাকবে। শেয়ার এখন বেশি আকর্ষণীয়, কারণ এটি কেবল কম দামে নয়, ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশের সুবিধাও দেয়—যা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে নেই।
ফরেক্স মার্কেটে প্রধান কারেন্সিগুলোর বিপরীতে মার্কিন ডলারের দর আবারও আত্মবিশ্বাসের সাথে বাড়তে পারে
যদি বাণিজ্য আলোচনায় সামান্য অগ্রগতিও হয়, তবে সেটি মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতির ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা যেতে পারে এবং এটি ডলারের আধিপত্য ও বৈশ্বিক প্রভাব বৃদ্ধির একটি মৌলিক কারণ হয়ে উঠতে পারে।
শুল্কসংক্রান্ত অচলাবস্থার সম্ভাব্য সমাধান কমোডিটি মার্কেটেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে
তেলের পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেটালের চাহিদা বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে। তবে স্বর্ণের দাম তখনও নিম্নমুখী থাকতে পারে।
তবে উপরের চিত্রটি কেবল তখনই বাস্তবায়িত হতে পারে, যদি বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাস পায়। এর আগে পর্যন্ত, পুনরায় সেল-অফ বা বিক্রির প্রবণতার ঝুঁকি থেকেই যাবে—এবং এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ফাঁদ হতে পারে।
দৈনিক পূর্বাভাস:
AUD/USD
সোমবারের আশাবাদের তরঙ্গে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন হয়। যদি পরিস্থিতির আরও উন্নতি না ঘটে, তাহলে 0.5944 এর দিকে পুনরায় দরপতন ঘটতে পারে—বিশেষ করে ট্রাম্প যদি চীনের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেন। এক্ষেত্রে এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে 0.6055 এর লেভেল।
স্বর্ণ
স্বর্ণের মূল্য শর্ট কভারিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা সমর্থন পেয়েছে, তবে যদি মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে 3018.80 লেভেলের ওপরে স্থায়ী না হয়, তাহলে তা 2972.10 এর দিকে আবারও দরপতনের শিকার হতে পারে।
You have already liked this post today
*এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ আপনার সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রদান করা হয়, ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদানের জন্য প্রদান করা হয় না।
যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করছেন, তখন ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর অ্যাড্রিয়ানা কুগলার বলেছেন যে বর্তমান আরোপিত শুল্ক নীতিমালা মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী করতে পারে এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব পূর্বের প্রত্যাশার
বৃহস্পতিবারের জন্য বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে নির্ধারিত রয়েছে, তবে গতকাল আমরা দেখতে পেয়েছি যে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো বেশিরভাগ প্রতিবেদন উপেক্ষা করছে। খুব কম প্রতিবেদনই মূল্যের মুভমেন্টের
মার্কেটে এক নতুন উদ্দীপনার ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি কাকতালীয় নয়: কাউকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে তারপর সামান্য কিছু ফিরিয়ে দিলেই তারা খুশি হয়ে ওঠে। তাহলে, এই নতুন
বুধবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এর সবকটাই পরিষেবা এবং উৎপাদন খাতে এপ্রিল মাসের পারচেসিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (PMI) সংক্রান্ত প্রতিবেদন। এই সূচকগুলো ইউরোপের অনেক দেশ, ইউরোজোন, যুক্তরাজ্য এবং
মঙ্গলবার কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই—না যুক্তরাষ্ট্রে, না ইউরোজোনে, না জার্মানিতে, না যুক্তরাজ্যে। সুতরাং, যদি মার্কেটের ট্রেডাররা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি মনোযোগ দিতেও চাইত, আজ সেরকম কিছুই নেই।
সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মার্কিন ডলারের মোট স্পেকুলেটিভ বিয়ারিশ পজিশন দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে -$10.1 বিলিয়ন হয়েছে। কানাডিয়ান ডলার এবং ইয়েন সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়েছে, যদিও ইউরোর মূল্যের মুভমেন্ট কিছুটা দুর্বল ছিল
InstaTrade in figures
Your IP address shows that you are currently located in the USA. If you are a resident of the United States, you are prohibited from using the services of InstaFintech Group including online trading, online transfers, deposit/withdrawal of funds, etc.
If you think you are seeing this message by mistake and your location is not the US, kindly proceed to the website. Otherwise, you must leave the website in order to comply with government restrictions.
Why does your IP address show your location as the USA?
Please confirm whether you are a US resident or not by clicking the relevant button below. If you choose the wrong option, being a US resident, you will not be able to open an account with InstaTrade anyway.
We are sorry for any inconvenience caused by this message.