লিও টলস্টয়

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম উল্লেখযোগ্য রাশিয়ান লেখক লিও টলস্টয় নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার অদ্ভুত রীতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 1906 সালে, রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্স তাকে পুরষ্কারের জন্য মনোনীত প্রার্থী হিসাবে প্রস্তাব করেছিল। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকা থেকে তার নাম বাদ দিতে কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন এই লেখক। এর কারণ ছিল নোবেল কমিটির প্রতি তার আস্থার অভাব এবং পুরস্কারের অর্থ সামলানোর অনিচ্ছা। লিও টলস্টয় তার দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেছেন, "এটি আমাকে এত অর্থ পরিচালনা করার দুর্দশা থেকে রক্ষা করেছে, কারণ আমার মতে এই পরিমাণ অর্থ কেবল দুর্ভোগ নিয়ে আসে।"

বার্নার্ড শ

প্রখ্যাত আইরিশ নাট্যকার এবং লেখক বার্নার্ড শ 1925 সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। নোবেল কমিটি উল্লিখিত উদ্ধৃতির মাধ্যমে তার কাজের প্রশংসা করেছে "...তার সাহিত্যকর্মে আদর্শবাদ এবং মানবতার জয়গান পাওয়া যার মধ্যে কাব্যিক সৌন্দর্যের সাথে ব্যঙ্গাত্নক দৃষ্টিভঙ্গি মিশ্রিত।" যাইহোক, এই লেখক শুধুমাত্র স্বীকৃতি গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন কিন্তু আর্থিক প্রণোদনাকে হ্যান্ডআউট বলে অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিষয়টি হল যে বছর তিনি নোবেল পুরস্কার পান সে বছর বার্নার্ড শ একটি লেখাও প্রকাশ করেননি।

রিচার্ড কুহন

1938 সালে, জার্মান বায়োকেমিস্ট রিচার্ড কুহন রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন। তার গবেষণায়, তিনি মানবদেহে ক্যারোটিনয়েড এবং ভিটামিনের প্রভাবের দিকটি উঠে এসেছে। যাইহোক, তিনি তার এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেননি। কারণ সেসসয় অ্যাডলফ হিটলার ক্ষমতায় ছিলেন এবং জার্মান নাগরিকদের নোবেল কমিটির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন।

গেরহার্ড ডোমাক

জার্মান ফিজিওলজিস্ট গেরহার্ড ডোমাক যক্ষ্মা সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য কয়েকটি ওষুধ তৈরি করেছিলেন। 1939 সালে, অ্যান্টিবায়োটিকের অগ্রদূত প্রোন্টোসিল ড্রাগ আবিষ্কারের জন্য এই বিজ্ঞানীকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এই অসামান্য রসায়নবিদ অনেক ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের জন্য প্রথম সফল থেরাপি পরিচালনা করেছিলেন। যাইহোক, নোবেল কমিটি কেবল বিজ্ঞান ক্ষেত্রে তার অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছে কারণ যুদ্ধের কারণে গেরহার্ডকে নগদ আর্থিক পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করতে হয়েছিল।

বরিস পাস্তেরনাক

1958 সালের অক্টোবরে, এই রুশ কবিকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। যাইহোক, বরিস পাস্তেরনাককে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করতে হয়েছিল। দেশটির কর্তৃপক্ষ তার উপন্যাস ডক্টর জিভাগো নিষিদ্ধ করেছিল। এর পূর্বে, সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ একটি ডিক্রি জারি করেছিল যেখানে নোবেল পুরস্কারকে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি শত্রুতার নিদর্শন হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।

আলেকজান্ডার সোলজেনিৎসিন

আলেকজান্ডার সোলজেনিৎসিন হলেন আরেকজন রাশিয়ান লেখক যিনি নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। 1970 সালে, দ্য গুলাগ আর্কিপেলাগো উপন্যাসটি "নৈতিক শক্তির জন্য যার সাথে তিনি রাশিয়ান সাহিত্যের অপরিহার্য ঐতিহ্য অনুসরণ করেছেন" প্রশংসিত হয়েছিল। মজার বিষয় হল, পুরস্কারের এক বছর আগে, তাকে ইউএসএসআর-এর লেখক ইউনিয়ন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল এবং গণমাধ্যমে তার নিন্দা করা হয়েছিল। অবশেষে, আলেকজান্ডার সোলজেনিৎসিন 1974 সালে তার প্রাপ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন।

লিউ জিয়াওবো

অক্টোবর 2010 সালে চীনা লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী লিউ জিয়াওবোকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং স্পর্শকাতর সমস্যা মোকাবেলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জোরালো আবেদনের জন্য তাকে পুরস্কৃত করা হয়। দুঃখজনকভাবে, লিউ জিয়াওবো পুরস্কারটি গ্রহণ করতে সক্ষম হননি কারণ তার মনোনয়নের এক বছর আগে, এই দার্শনিককে 11 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এই বিশিষ্ট ভিন্নমতাবলম্বী চীনে বন্দী থাকাকালীন সময় রোগে ভুগে মারা যান।